শহীদ তিতুমীরের জন্মদিন আজ

মহাবীর তিতুমীরের প্রকৃত নাম সৈয়দ মীর নিসার আলী। তিনি ছিলেন একজন ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী নেতা। ১৭৮২ সালে আজকের এ দিনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশপরগনা জেলার হায়দারপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মহাবীর তিতুমীর। আজ তার ২২৭ তম জন্মদিন।

তিতুমীর ১৮২২ সালে হজব্রত পালনের জন্য মক্কা শরীফ যান এবং সেখানে তিনি বিখ্যাত ইসলামি ধর্মসংস্কারক ও বিপ্লবী নেতা সাইয়িদ আহমদ বেরেলীর সান্নিধ্য লাভ করেন। সাইয়িদ আহমদ তাকে বাংলার মুসলমানদের অনৈসলামিক রীতিনীতির অনুশীলন এবং বিদেশি শক্তির পরাধীনতা থেকে মুক্ত করার কাজে উদ্বুদ্ধ করেন।

১৮২৭ সালে তিতুমীর নিজ গ্রামের দরিদ্র কৃষকদের নিয়ে জমিদার ও ব্রিটিশ নীলকরদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে ক’জন বাঙালি বিপ্লবী সাড়া জাগিয়েছিলেন তাদের মধ্যে শহীদ তিতুমীরের অবস্থান সামনের কাতারে। সমরশক্তি ছাড়া শুধুমাত্র মানসিক পরাক্রম দ্বারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার সাহসিকতার স্ফুলিঙ্গ তাকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়। নিজের জীবনের বিনিময়েও অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেননি কখনো। ছিলেন ধর্মপ্রাণ, কিন্তু অত্যাচার করেননি অন্য কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠীকে।
বারাসতের নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে ১৮৩১ সালের ২৩ অক্টোবর তিনি বাঁশের কেল্লা তৈরি করে চব্বিশপরগনা, নদীয়া ও ফরিদপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। জমিদার ও ব্রিটিশ বাহিনী তিতুমীরের হাতে বেশ কয়েকবার পরাজিত হয়। বারাসতের বিদ্রোহে প্রায় ৮৩ হাজার কৃষকসেনা তিতুমীরের পক্ষে যুদ্ধ করেন। ১৮৩১ সালের ১৩ নভেম্বর ব্রিটিশ সৈন্যরা তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। এ সময়ে তিতুমীর স্বাধীনতা ঘোষণায় বলেন, একটু পরেই ইংরেজ বাহিনী আমাদের কেল্লা আক্রমণ করবে। লড়াইতে হারজিত আছেই, এতে আমাদের ভয় পেলে চলবে না। দেশের জন্য শহীদ হওয়ার মর্যাদা অনেক। এ লড়াই শেষ লড়াই নয়। আমাদের লড়াইয়ের প্রেরণায় এ দেশের মানুষ একদিন দেশ উদ্ধার করবে।

কয়েকদিন রক্তক্ষয়ি যুদ্ধের পর ১৯ নভেম্বরে বহুসংখ্যক অনুসারিসহ তিতুমীর শহীদ হন। অধিনায়ক গোলাম মাসুমসহ ৩৫০ জন বিপ্লবী সৈনিক ইংরেজদের হাতে বন্দি হন। গোলাম মাসুম মৃত্যুদন্ডে দণ্ডিত হন।

Comments

Popular posts from this blog

উপসংহার

আহমদ ছফা

বাংলাদেশী সঙ্গীতের বরপুত্র : হ্যাপী আখন্দ